রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রচণ্ড গরম ও দিন বড় হওয়াতে এবারের রোজা রাখা বেশ কষ্টসাধ্য হবে। বিশেষ করে শরীরকে হাইড্রেড রাখা বেশ কঠিন হবে। পানি স্বল্পতা যাতে তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি ও পানি জাতীয় খাবার, ফলমূল খেতে হবে। পানিশূন্যতা রোধ এবং শরীরের বিপাক ক্রিয়ার জন্য পানি বা শরবত অপরিহার্য।
ডায়াবেটিস রোগীর ইফতার-
- পানিশূন্যতা এবং শারীরিক বিপাক ক্রিয়ার জন্য বিকল্প চিনি দিয়ে অথবা বিকল্প চিনি ছাড়া ইসবগুল, লেবু, তেঁতুল বা কাঁচা আমের সরবত খাওয়া যেতে পারে।
- কচি ডাবের পানি, টক ফলের জুস, টক দই দিয়ে তৈরি লাচ্ছি খাওয়া যাবে।
- খনিজ লবণ ও ভিটামিনের জন্য টক ও মিষ্টি ফলের সালাদের সংমিশ্রণ উপকারী ও উপাদেয়।
- রক্তের কোলেস্টেরল ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কাঁচা ছোলার সাথে আদাকুচি, টমেটো, পুদিনা পাতা ও লবণ মিশিয়ে খেলে সেটা সুস্বাদু ও উপকারীও হয়।
- ইফতারির খাবারের পরিমাণ হবে অন্য সময়ের সকালের খাবারের সমান।
- শশা, খিরা, আমরা, কচি পেয়ারা, ডাবের পানি, লেবুর পানি( চিনি ছাড়া) ও অন্যান্য টক ফল ইচ্ছামতো খাওয়া যাবে।
সন্ধারাতের খাবার-
- ডায়াবেটিস রোগীদের সন্ধারাতের খাবার বাদ দেওয়া একেবারেই উচিত নয়।
- সন্ধ্যা রাতের খাবার হবে অন্য সময়ের রাতের খাবারের সমপরিমাণ।
- এইসময় ভাত খাওয়া যাবে। তবে প্রত্যেকেই নিজ নিজ বরাদ্ধ অনুসারে খাবার খাবেন।
- হালকা মশলাযুক্ত খাবার, ছোটমাছ ও প্রচুর পরিমাণে সবজি খেতে হবে।
সেহরির খাবার-
- ডায়াবেটিস রোগীরা সেহেরির শেষ সময়ের দিকে সেহেরি খাবেন। যাতে না খেয়ে থাকার সময়টা কম হবে এবং এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি কমবে।
- সেহরিতে রুটি বা ভাত যেকোনোটাই খাওয়া যাবে। এবং অন্য সময়ের দুপুরের সমপরিমাণ খাবার গ্রহণ করতে হবে।
- মাছ মাংস ডিম দুধ সব খেতে পারেন।
সতর্কতা-
- যাদের ডায়াবেটিসের সাথে কিডনির সমস্যা, ইউরিক এসিডের সমস্যা আছে তারা ডালের তৈরি খাবার কম খাবেন। সেই ক্ষেত্রে মুরি, চিড়া এবং চালের গুড়া, আলুপুরি, আলুর চপ ইত্যাদি খাওয়া যাবে।
- আলসারের সমস্যা থাকলে বেশি তেলে ভাজা বা ঝালযুক্ত খাবার কম খাবেন।
- ওজন বেশি হলে যতটা সম্ভব কম খেতে হবে এবং খাবারে তেলের পরিমাণ কমাতে হবে।
- সেহেরিতে কখনো না খেয়ে রোজা রাখবেন না। এতে রক্তের সুগার কমে যেয়ে বিপদ জনক অবস্থা হতে পারে।
ডা. এম. এম. রহমান রাজীব